Header Ads

Header ADS

৮ম শ্রেণির বাংলা ২০২৫ কবিতা মানবধর্ম: লালন শাহ্ | Class 8 Bangla 2025

 ৮ম শ্রেণির বাংলা ২০২৫ কবিতা মানবধর্ম: লালন শাহ্ কবিতার প্রতিটি লাইন সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা, বহুনির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর, উদ্দীপক প্রশ্নের উত্তর এবং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে। 😊📖🎬


মানবধর্ম

- লালন শাহ্ 

সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে।

লালন কয়, জেতের কী রূপ, দেখলাম না এ নজরে।


কেউ মালা, কেউ তসবি গলায়,

তাইতে কি জাত ভিন্ন বলায়,

যাওয়া কিংবা আসার বেলায়

জেতের চিহ্ন রয় কার রে।


গর্তে গেলে কূপজল কয়,

গঙ্গায় গেলে গঙ্গাজল হয়,

মূলে এক জল, সে যে ভিন্ন নয়,

ভিন্ন জানায় পাত্র-অনুসারে ॥


জগৎ বেড়ে জেতের কথা,

লোকে গৌরব করে যথা তথা,

লালন সে জেতের ফাতা

বিকিয়েছে সাধ বাজারে ॥


পাঠের উদ্দেশ্য

এই কবিতা পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বুঝতে সক্ষম হবে যে, ধর্ম বা সম্প্রদায়গত পরিচিতির চেয়ে মানুষ হিসেবে পরিচয়টাই বড়। তারা জাত-পাত বা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি বা মিথ্যে গর্ব করা থেকে বিরত থাকবে।

পাঠ-পরিচিতি

সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে' গানটি 'মানবধর্ম' কবিতা হিসেবে এ গ্রন্থে গৃহীত হয়েছে। এ কবিতায় লালন ফকির মানুষের জাত-পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। লালন নিজে কোন ধর্মের বা জাতের এমন প্রশ্ন আগেও ছিল, এখনো আছে। লালন বলেছেন, জাতকে তিনি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না। মনুষ্যধর্মই মূলকথা ৷ কারো গলায় মালা, কারো হাতে তসবি থাকে । এগুলো ভিন্ন ভিন্ন জাতের পরিচয় বহন করে । কিন্তু জন্ম বা মৃত্যুর সময় মানুষের জাতের কোনো চিহ্ন থাকে না। মানুষ জাত ও ধর্মভেদে যে ভিন্নতার কথা বলে লালন তা বিশ্বাস করেন না।

লেখক-পরিচিতি

লালন শাহ্ মানবতাবাদী মরমি কবি। সাধক সিরাজ সাঁই বা সিরাজ শাহ্ শিষ্যত্ব গ্রহণ করার পর তিনি লালন সাঁই বা লালন শাহ্ নামে পরিচিতি অর্জন করেন। গানে তিনি নিজেকে ফকির লালন হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যালাভ না করলেও নিজের চিন্তা ও সাধনায় তিনি হিন্দু ও মুসলমানের ধর্মীয় শাস্ত্র সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করেন। এই জ্ঞানের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির মিলনে তিনি নতুন এক দর্শন প্রচার করেন। গানের মধ্য দিয়ে তাঁর এই দর্শন প্রকাশ পেয়েছে। অধ্যাত্মভাব ও মরমি রসব্যঞ্জনা তাঁর গানের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। তিনি সহস্রাধিক গান রচনা করেন। 

লালন শাহ্ ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে ঝিনাইদহ, মতান্তরে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দে কুষ্টিয়ার ছেউরিয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়।

কর্ম-অনুশীলন

ক. তোমার চারদিকে নানা শ্রেণিপেশা ও ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষ রয়েছে। এদের সম্পর্কে তোমার সহপাঠীদের মনোভাব জেনে একটি গবেষণা নিবন্ধ তৈরি কর। শিক্ষকদের সহযোগিতায় প্রশ্নমালা তৈরি করে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং তার আলোকে বিচার-বিশ্লেষণ করে উপস্থাপন করতে হবে। জাতি, ধর্ম, গোত্র, শ্রেণি, পেশা নির্বিশেষে সকল মানুষই যে শ্রদ্ধা ও সম্মান পাওয়ার যোগ্য- এই দৃষ্টিকোণ থেকে কাজটি করতে হবে ।

অনুশীলনী


বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

১. মানুষের কোন পরিচয়টি বড় হওয়া উচিত?

ক. সামাজিক     খ. ধর্মীয়

গ. মানবিক       ঘ.পেশাগত


২. লালনের মতে মানুষের জন্য ক্ষতিকর—

i. জাতের বড়াই

ii. কূপের জল

iii. বংশ কৌলিন্য


নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii      খ. i ও iii

গ. ii ও iii    গ. i, ii ও iii


উদ্দীপকটি পড় এবং ৩ ও 8 নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:

৩. লালন শাহ্‌ রচিত গানটি 'মানবধর্ম' শিরোনামে গৃহীত হয়েছে। শিরোনামটির মর্মার্থ নিচের কোন পঙক্তিতে প্রকাশ পেয়েছে?


ক. এসো আজ মুঠি মুঠি মাখি সে আলো!

খ. শুন হে মানুষ ভাই

সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।

গ. কালো আর ধলো বাহিরে কেবল

ভিতরে সবার সমান রাঙা।

ঘ. পথশিশু, নরশিশু, দিদি মাঝে পড়ে

দোঁহারে বাঁধিয়া দিল পরিচয় ডোরে।


৪. উক্ত মর্মার্থে মূলত প্রকাশ পেয়েছে   

i. অধ্যাত্মভাব

ii. অসাম্প্রদায়িক চেতনা

iii. মানবতাবোধ


নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii      খ. i ও iii

গ. ii ও iii    গ. i, ii ও iii


সৃজনশীল প্রশ্ন


‘জগৎ জুড়িয়া এক জাতি আছে

সে জাতির নাম মানুষ জাতি; এ

এক পৃথিবীর স্তন্যে লালিত

একই রবি শশী মোদের সাথি।


বাহিরের ছোপ আঁচড়ে সে লোপ

ভিতরের রং পলকে ফোটে

বামুন, শূদ্র, বৃহৎ, ক্ষুদ্র

কৃত্রিম ভেদ ধুলায় লোটে।’


ক. ‘কূপজল’ অর্থ কী?

খ. জাতপাত নিয়ে বাড়াবাড়ি করা উচিত নয় কেন? -ব্যাখ্যা করো

গ. উদ্দীপক ও ‘মানবধর্ম’ কবিতায় মানুষের যে মিল পাওয়া যায় তা আলোচনা করো।

ঘ. উদ্দীপক ও ‘মানবধর্ম’ কবিতায় যে-ধর্ম চর্চার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে তা মূল্যায়ন করো।


No comments

Theme images by luoman. Powered by Blogger.